সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৮ আগস্ট ২০২৫ খ্রী.
গাজীপুরে একজন সাংবাদিককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা এবং আরেকজনকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় গভীর শোক, তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠন ই-প্রেস ক্লাব।
এক বিবৃতিতে সংগঠনটি অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার একটি এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিন। একই দিনে হামলার শিকার হন দৈনিক বাংলাদেশের আলো-এর সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন সৌরভ, যিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ই-প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলুল কবীর বলেন—
“সাংবাদিকরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কলম ধরেন। সেই কলম রক্তে রঞ্জিত হওয়া মানবতা, গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এক ভয়াবহ আঘাত। এই হত্যাকাণ্ড ও হামলা কেবল ব্যক্তি নয়, সাংবাদিকতার পেশাকেই নির্মমভাবে আঘাত করেছে।”
তিনি আরও বলেন- “সাংবাদিক হত্যা কোনো স্বাধীন রাষ্ট্রে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সরকারকে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।”
ই-প্রেস ক্লাবের তিন দফা দাবিঃ
১. সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডের দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা এবং নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান।
২. সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ আইন প্রণয়ন এবং জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিক সুরক্ষা কাঠামো গঠন।
৩. সাংবাদিকদের ওপর সংঘটিত সহিংসতা, নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনার দ্রুত বিচার ও দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা।
ঘটনার পর সারাদেশে সাংবাদিক সমাজে চরম ক্ষোভ ও নিরাপত্তাহীনতা ছড়িয়ে পড়েছে। সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম সংস্থা একযোগে নিন্দা জানিয়ে দ্রুত তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে। তারা অভিযোগ করেছেন— সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা ও হয়রানির ঘটনা নিয়মিত ঘটলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিচার হয় না।
পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ই-প্রেস ক্লাব মনে করে, “সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে, যা গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত।”
সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারকে উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়—
“গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় এখনই কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে সাংবাদিকতার পরিবেশ আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে।”